পুরো বাংলাদেশে আমার মতে বাশখালি উপজেলাটি সবচেয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ। উত্তরে সাংগু নদী বিভক্ত করেছে আনোয়ারা হতে বাশখালিকে। দক্ষিণে মাতামুহুরি ভাগে করে দিয়েছে কক্সবাজারের চকরিয়া এবং পেকুয়া উপজেলাকে। অর্থাৎ সাংগু থেকে শুরু হয়ে সাপ সদৃশ এই বাশখালি উপজেলা শেষ হয়েছে মাতামুহুরি গিয়ে।
অ পূর্ব পাশে সাতকানিয়া এবং লোহাগড়া উপজেলাকে ভাগ করে রেখেছে বিস্তীর্ণ পাহাড়শ্রেণী এবং পশ্চিমে সুবিশাল কুতুবদিয়া চ্যানেল মিলিত হয়েছে বঙ্গোপসাগরে যেটি ভাগ করে দিয়েছে কুতুবদিয়াকে।কি নেই এখানে? প্রতিটা ঋতুতে যেন ভিন্ন ভিন্ন উৎসবের আমেজ। গ্রীষ্মে শুরু হয় রসালো ফল চাষের ফলন ঘরে তুলার মাধ্যমে। যারা মধ্যে লিচু এবং আখ অন্যতম। মৌসুমের শুরুতে বাজারে যে লিচু দেখা যায় সেটি এই বাশখালির লিচু। লিচু শেষ হলে শুরু হবে আখ চাষ।
গ্রীষ্ম হলেই বর্ষার আগমন। কারো জন্য কষ্টের হলে ও বর্ষা আসে বাশখালি মানুষের জন্য আশীর্বাদ হয়ে। কারন একটাই প্রায় প্রতিটা পরিবারই মাছ ধরা কিংবা ব্যবসার সাথে জড়িত। এই বর্ষা মৌসুমে যে পরিমাণ সামুদ্রিক মাছ পাওয়া যায় বাকি পাচ মৌসুমের যা পাওয়া যায় তার চেয়ে বহুগুণ। এই মাছের উপর আবার বাশখালির পরিবহণ সেক্টর অনেকাংশ নির্ভরশীল। বর্ষায় শুরু হয়ে মাছ ধরাটা বিস্তৃত থাকে শরতকাল পর্যন্ত। হেমন্ত প্রবেশ করে কৃষকদের মুখের সফলতার হাসির মধ্য দিয়ে। বর্ষার শেষে গিরা পানিতে রোপন করা ধানের ফলন ঘরে তোলার সময় এই হেমন্ত। তাছাড়া বর্ষকালীন সবজিতো আছে। শীত আসে সবজি এবং লবন চাষের মধ্য দিয়ে। যতদূর চোখ যায় ধূসর প্রান্তর লবন চাষে ঘেরা মাঠ। পাল্লা দিয়ে বাশখালি ও এখন লবন চাষে বিখ্যাত। তাছাড়া পূর্বের পাহাড়শ্রেণী নিঃসন্দেহে অনেক মূল্যবান গাছের যোগান দেয়। ভ্রমন যারা পছন্দ করে তাদের জন্য বাশখালি হল বাংলাদেশের বুকে এক খন্ড ভূস্বর্গ। বৈলগাও চা বাগান, খানখানাবাদ সমুদ্র সৈকত, বাহারছড়া সমুদ্র সৈকত, কালীপুর লিচু বাগান, চাম্বল-চুনতী অভয়ারণ্য, গন্ডামারা সমুদ্র সৈকত, বাশখালি ইকোপার্ক, জলদি সংরক্ষিত বনাঞ্চল, বখশি হামিদ মসজিদ, শিখ মন্দির, নিম কালিবাড়ি সহ আরো নানান দর্শনীয় জায়গা বাশখালিতে অবস্থিত।
সর্বোপরি আমি হলফ করে বলতে পারি আগামী পনের বিশ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের মানুষ রুল মডেলের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বাশখালিকে উদাহরণ হিসেবে টানবে। আর এইসব জায়গাগুলো ঘুরতে দুদিন সময় নিলে অনায়াসে ঘুরে আসতে পারবেন।
আর যেখানে যান না কেন, পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা আপনার নৈতিক দায়িত্ব। অপছনশীল কোন কিছু ঐসব জায়গায় ফেলে আসবেন না।
চট্টগ্রামের নতুন ব্রীজ হতে সিএজি কিংবা বাসে করে বাশখালি যাওয়া যায়। যারা যাবেন চুপিচুপি ঘুরে আসবেন। কোন বেহায়াপনা, ওভার স্মার্ট কিংবা নোংরামি করবেন না এই জায়গায়। বিশেষ করে মেয়েদের বলছি। বাশখালির মানুষগুলো খুবই ধার্মিক। তারা হয়তোবা এগুলো ভালভাবে নেয় না।
TAGS: COXBAZAR, দ্বীপ থেকে দ্বীপে কুমের জগতে, থাইল্যান্ড ভ্রমণ
TAGS: COXBAZAR, দ্বীপ থেকে দ্বীপে কুমের জগতে, থাইল্যান্ড ভ্রমণ
0 Comments